ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক আবেদন করুন ঘরে বসে

সুপ্রিয় নাবিক ভাইয়েরা সবাই কেমন আছেন? সবাইকে আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা। যারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন জাহাজে চাকরি করেছেন। তারা ইতি মধ্যে জেনে গেছেন আপনার জন্য কতটা দরকারি এই ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক। তবে অনেকে যারা এই বিষয়টা ভালোভাবে বিস্তারিত জানেন না বা এটা কিভাবে করবেন তা জানতে আগ্রহী মূলত তাদের জন্য আমাদের এই পোষ্ট। পুরোটা পড়লে আশাকরি অনেক তথ্য জানতে পারবেন। সাথেই থাকুন আমাদের। পুড়ন ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক।

সবার আগে জানতে হবে এই ইনল্যান্ড সার্ভিস বুকটা কি? আসলে আমাদের ভেতর যেসব মেরিনার ভাইয়েরা বিদেশী জাহাজে চাকুরি করেন বা করেছেন। তার সবাই জানেন এটা কি? শুধু ইনল্যান্ড নাবিকদের জন্য বিষয়টা নতুন। আসলে এটা একজন নাবিকের কর্মক্ষেত্রের ডাটাবেজ। আপনি কর্মজীবনে কতদিন কোন জাহাজের চাকুরি করেছেন তার সম্পূর্ণ ডাটা এন্ট্রি করা থাকবে এখানে। এই নাবিক সার্ভিস বুক দেখেই সহজেই বোঝা যাবে আপনার সি সার্ভিস কতদিন এবং কোন কোনা জাহাজের কর্মরত ছিলেন।

ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক পেতে কি কাগজপত্র লাগে

শুরুতেই আপনাকে এই সার্ভিস বুক পেতে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে। নিচে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো।

১। কোর্স সার্টিফিকেট

২। বেসিক-৪ সার্টিফিকেট

৩। কোম্পানির প্যাড/প্রতয়ন পত্র  

৪। SCS/HSC সার্টিফিকেট

৫। ভোটার আইডি কাড  

৬। সদ্য তোলা ছবি (ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা)

৭। সাদা কাগজে সিগনেচার করে ছবি দিতে হবে

৮। রক্তের গ্রুপ

উপরের সব ডকুমেন্ট গুলোর স্ক্যানিং কপি সাথে রাখবেন। কেননা আবেদন এর সময় এসব ডকুমেন্টর ছবি আপলোড করতে হবে।

ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক আবেদন

আপনি নিজে যদি ঘরে বসে সার্ভিস বুক পেতে আবেদন করতে চান সেটা পারবেন। কেননা প্রতিটি ধাপ খুব সহজে করা হয়েছে। ধাপে ধাপে সহজ করে আপনাদের জন্য তুলে ধরছি।

০১. সবার প্রথমে ডিজি শিপিং এর এই ওয়েবসাইটে যাবেন। প্রথম পেইজে প্রার্থীর আবেদন এখানে ক্লিক করবেন।

০২. যে পেইজ আসবে ওখানে নিজের ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, ইমেল আইডি ও শক্তিশালী একটা পাসওর্য়াড দিবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে আপনাকে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে একটা ৬ ডিজিটের কোড সংখ্যা দিয়ে ভেরিফিকেশন করতে বলবে।

০৩. আপনার সব তথ্য ঠিক থাকলে আপনার নাম্বারে ইউজার আইডি হিসেব ICN ১৬ ডিজিটের একটি নাম্বার দিবে। এখানে উল্লেখ্য আপনার এই আইসিএন নাম্বার আর আগের পেইজে দেওয়া পার্সওয়াড দিয়ে আপনি লগিন অপশন থেকে লগিন করে ডেশবোর্ডে যাবেন।

০৪. ড্যাশবোর্ডে গিয়ে আপনার প্রথম কাজ হলে প্রোফাইল আপডেট। ওখানে ৩০০ বাই ৩৩৩ পিক্সেল এর একটি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি দিবেন। সাদা কাগজে স্ক্রানিং করা ছবি আপলোড করবেন। যদি সার্টিফিকেট ( ইনল্যান্ড মাষ্টার) থাকে তার নাম্বার দিবেন। বর্তমান ঠিকানা দিবেন সাথে কুরিয়ার নাম্বার। সব ঠিক থাকলে আপডেট অপশনে ক্লিক করবেন।

আরো পড়ুন ঢাকা টু হাতিয়া লঞ্চ সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা

সার্ভিস বুক পেতে যা যা করবেন

উপরের কাজ গুলো শেষ হলে পরবর্তী ধপে আরো কিছু কাজ করতে হবে। ধাপে ধাপে তা তুলে ধরা হলো:

০১. ড্যাশবোর্ডে ভয়েজ রেকর্ড নামে একটা অপশন পাবেন। ওটাতে যাবেন।

০২. আপনার কোম্পানির প্যাড বা প্রতয়ন পত্র অনুযায়ী ভয়েজ রিপোর্ট পেশ করুন।

০৩. যেমন জাহাজের M বা রেজিষ্টেশন নাম্বার, জাহাজের নাম অটো চলে আসবেন। কবে জয়েন করছেন, কবে জাহাজ ত্যাগ করছেন এগুলো পূরন করার পর। পাশের থাকা ডকুমেন্ট আপলোড এর ঘরে কোম্পানির প্যাড বা প্রতয়ন পত্র এর স্ক্যানিং করে রাখা ছবিটা আপলোড করুন।

এবার মূল আবেদন যাবেন। ড্যাশবোর্ডে থাকে আবেদন অপশনে গেলে পরবর্তী পেইজ দেখতে পাবেন। সেখানে সার্ভিস বুক আবেদনের অপশন সিলেক্ট করুন। আরো যাবতীয় তথ্য গুলো পূরণ করে নেক্সট এর ক্লিক করুন।

এখানে আপনার পূরণ করা সব তথ্য দেখতে পাবেন। এবার আসবে টাকা জমাদানের পর্ব। উপরের কর্ণারে থাকা পেমেন্ট অপশনে গিয়ে ক্লিক করলে সোনালী ব্যাংকের গেটওয়েতে নিয়ে যাবে। ওখানে সরকারি ফি ৫০০ টাকার সাথে মোট ৫০৬ টাকার মতো খরচ হবে। পেমেন্ট দেওয়ার পর। আপনার আবেদন এর ঘরে টাকা পেইড দেখাবে। এবং কিছুদিনের মধ্যে ডিজি শিপিং আপনার ডকুমেন্ট গুলো সব চেইক করে আপনাকে ওখানে সঠিক কিনা তা জানিয়ে দিবে। পরে এই তথ্য গুলো দিয়ে করা সার্ভিস বুকের কপিটি পিডিএফ ডাউনলোড করুন।

পরে আপনাকে আই টেস্ট এর জন্য ডাকা হবে। আই টেস্টে উর্ত্তীন হলে সহজে গিয়ে আপনি নিয়ে আসতে পারেন আপনার কাঙ্কিত ইনল্যান্ড নাবিক সার্ভিস বুক। অবশ্যই সাথে করে ডাউনলোড করা পিফিএফ সার্ভিস বুক পেইজটা নিয়ে যাবেন আই টেস্টে।

আমাদের শেষ কথা

পুরো লেখা পরে বিভিন্ন ধাপ দেখে যদি আপনি ঘাপড়ে গিয়ে থাকেন। কিংবা বেশ কঠিক মনে হচ্ছে তাহলে আরেকটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন। ডিজি শিপিং আগারগাও, শেরে বাংলা থানার সামনে কিছু কম্পিউটারের দোকানে থেকে আপনি সহজে এই আবেদন পূরণ করতে পারবেন। তারা এই কাজের জন্য ৭০০-৮০০ টাকা পযন্ত নিয়ে থাকে।

লেখাটা ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top