লেখক: আয়েশ ইকবাল রাজিব।
পর্ব : ১
পতিক—নামটি কারো ভালো লাগার ছিল না। কারণ সে যে এতিম, অনাথ, পরিচয়হীন। এতিমখানার বৃদ্ধ খাদেমরা যখন ছেলেটির নাম রাখতে গিয়ে বিব্রত হয়, তখন মসজিদের পুরনো দেয়ালে লেখা একটা শব্দ থেকে উঠে আসে এই নাম: ‘পতিক’—পথের সন্তান, কারো নয়, কারো ছিল না, কোনোদিন হবেও না।
তাকে পাওয়া গিয়েছিল এক ভোররাতে চট্টগ্রামের এক পুরনো মসজিদের সিঁড়িতে। এক টুকরো ময়লা চাদরে জড়ানো, মুখে মাছির দংশন, ঠোঁট শুকিয়ে চামড়া হয়ে গেছে। কে রেখেছে তাকে, কেউ জানে না।
মসজিদের মুয়াজ্জিন ‘হযরত আলী’ নামের এক বৃদ্ধ বলেছিলেন, “শিশুটা তো মরেই যাচ্ছিল, আল্লাহর রহমতে কইরা বাঁচাইছি।”
তারপর সে চলে যায় শহরের এক সরকারি এতিমখানায়। খাঁচার মতো ঘর, নরম বিছানার বদলে শক্ত মেঝে, মায়ের কোলের বদলে ঠাণ্ডা দেয়ালের কোণ। খাওয়ার নাম করে দেওয়া হত ভাত আর এক চামচ ডাল। খেলেই বাঁচবে, না খেলেই থাকবে—কারও কিছু যায় আসে না।
পতিক ছোটবেলা থেকেই বোঝে, পৃথিবীর প্রতিটি মুখে মুখোশ। কেউ আদর করে না নিঃস্বকে, ভালোবাসা দেয় না যাকে কেউ চেনে না।
বাকি ছেলেরা যখন মা দিবসে কার্ড বানাত, পতিক দাঁড়িয়ে থাকত দূরে। কারণ সে জানত না ‘মা’ দেখতে কেমন, তার গন্ধ কেমন, গলার স্বরটা কেমন।
একবার পতিক এতিম খানার কাজের জন্য বের হইছিল, তখন এক দোকান জিজ্ঞেস করেছিল, “তোমার মা, বাবা,কোথায়?” পতিক চুপ করে ছিল। চাচা আমার পৃথীবিতে কেউ নাই, আমি এতিম, তাকে চড় মেরে বলা হয়েছিল, “মা-বাবার ঠিকানা না থাকলে মানুষ হয় না। তুই কোন জাতের?”
কে জানে, বের হয় দোকান থেকে।
পতিক সেদিন রাতে অনেক কেঁদেছিল। যে কান্না কেউ শোনেনি। এতিমদের কান্না কেউ শুনে না, কারণ তাদের কষ্টে সমাজের কিছু যায় আসে না।
শিশুকাল থেকে পতিক শিখে গেছে—পৃথিবীতে কারো দরকার না হলে সে মানুষ না। সে শুধু একটা সংখ্যা, একটা ‘বোঝা’, একটা ফেলে দেওয়া নাম।
আর সেই বোঝা বয়ে বয়ে, পনেরো বছর বয়সে, তাকে একদিন তাড়িয়ে দেওয়া হয় এতিমখানার গেট থেকে।
“তুই বড় হইছস। চল, বাইর হ। নিজে কামাই কইরা খা।”
পতিক তখন মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসে—কোনো গন্তব্য নেই, কোনো চেনা মুখ নেই, কোনো অপেক্ষা নেই। তার হাতে শুধু একটা ছেঁড়া ব্যাগ আর বুকের ভেতরে অসীম শূন্যতা।
বাহিরের জগতের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, কেউ থাকে চিনি না, বা পতিক কাউকে চিনে,
সে হাঁটে শহরের রাস্তায়, ভাঙা জুতো পায়ে।
সে বুজতে পাড়ে, তার একটি কাজের প্রয়োজন, তা না হলে এই ইট পাথরের শহরে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে,
প্রতিটি মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে কাজ চায়।
কিন্তু কাউকে বলতে পাড়ে না, কাকে বলবে সে তো আর কাউকে চিনে না,
একদিন, এক লোক কাজের জন্য লোক খুজে, তখন পতিক গিয়ে বলে। কাজটা আমাকে দেন,
মাটি কাটার কাজ পাড়বে,
“চাচা, আমি মাটি কাটতে পারি, কাজ দেন।”
তুই কে, তোর পরিচয় কী,
পতিক : চাচা এই শহরে আমার কেউ নাই, এতিমখানা বড় হইছি, কিছু দিন আগে সেখান থেকে বের করে দিসে, দুইদিন যাবত,কিছু খাই নাই, কাজটা দিলে উপকার হতো
“তুই এতিম?” “হ্যাঁ।” “তাহলে থাক, তোদের বিশ্বাস করা যায় না।”
মনে কষ্ট নিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসে, কিন্তু ক্ষুদ্রা যেন থাকে শেষ করে ফেলে, আর হাটতে পাড়ে না, রাস্তায় বসে পড়ে, হঠাৎ নজর পরে কে যেন কিছু ফেলে গেছে, পথিক সেখানে ছুটে গেছে, যদি খাবার থাকে সেখানে, দৌড়ে গিয়ে দেখে কিছু পলিথিন কোন খাবার নেই,
রাস্তার দেয়ালের সাথে মাথা দিয়ে বসে পড়ে , আর হাটতে পাড়ে না, হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ে।
কিন্তু ক্ষুদ্রান্ত পেটে তো খাবার খুজে,
সেই রাস্তা দিয়ে, হঠাৎ পতিকের নাকে খাবারের ঘ্রান, কেউ যেনো খাবার নিয়ে আসতে আছে, চোখ মেলে দেখে এক লোক খাবার নিয়ে আসতে আছে,
পতিকের মুখে হাসি যদি একটু খাবার দেয়, কাছাকাছি আসার পর।
পতিক : ভাই আপনার হাতে কী খাবার, একটু দেন ভাই আমি কিছু খাই না, বলার সাথে সাথে, চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিসে। ভাই আমি খাবার না খাইতে পারে, এখন হাটতে পাড়ি না, যদি একটু খাবার দিতেন।
লোকটি : তোদের ভালো করে চিনি, রাতে চুরি করোস, আর দিন হলে নাটক করোস, আর চোখে পানি, এই গুলো আনতে তোদের সময় লাগে না,
পতিক: ভাই আমি ওই রকম লোক না, আমার পৃথিবীতে মা বাবা কেউ নাই, কিছুদিন আগে এতিমখানা থেকে বের হইছি, বিশ্বাস করেন ভাই,বলে চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে, লোকটি পা জড়িয়ে ধরে।
লোকটি : শুন তোরা কেমন সেটা মানুষ জানে,আর একবার যদি ভণ্ডামি করোস মাইর খাবি, জনগণের মাইর খাইচোস কখনো, ভন্ড।
বলে লোকটি চলে গেলো,
পতিকের যেন চোখের পানি আর ও ভেরে গেলো, রাত চলে আসলে, ক্ষুদ্রা যেন আর ও ভয়ংকর রুপ নিলো, কোন সময় পতিকের চোখে ঘুম চলে আসল পতিক টেরই পেলো না।
শহরের হৈচৈ শব্দ তার চোখ খুলে, আল্লাহ যেন পতিকের মুখে দিকে ফিরে তাকাইলো, এক লোক এসে থাকে খাবার দেয়।
বাবা আমি তোমাকে চিনি না, তবে কাল থেকে এখানে পড়ে থাকতে দেখে বুজছি তোমার এই শহরে কেউ নাই তোমার, কাল তুমি যেভাবে খাবারের জন্য কান্না করলা, আমি সব দেখছি। তাই আজ তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম।
পতিকের মুখে যেন হাসি থামছে না, পতিক হাত থেকে খাবার নিয়ে, তৃপ্তি সহকারে খাইলো, খাবারের শেষে কান্না করে দিলো, পতিক লোকটিকে জড়িয়ে ধরতর চায়, কিন্তু ভয়ে ধরে না, যদি কিছু বলে।
ভাই আপনার নাম কী? লোকটি হাসে বলে, “আয়াশ”,আপনার জন্য দোয়া রইল মন থেকে, আপনি যেন অনেক বড় হন, আল্লাহ যেন আপনার মনের আশা পূরণ করে।
তুমি তো কাজ করতে হবে এভাবে আর কত সময় থাকবে, কেউ কাজ দেয় না, সবাই তাড়িয়ে দেয়,
শুন এই যে সবাই কে দেখতে আছো না, আমার সবাই স্বার্থপর, দেখো সকাল থেকে যুদ্ধ শুরু করে, কিসেন সাথে জানো, নিজেন সাথে। পরিবারের জন্য, নিজের সবকিছু ভুলে গিয়ে পরিবারের জন্য যুদ্ধ করে, আমি নিজে ও বেকার চাকরি নেই। চাকরি পাইতেছিনা,
তবে তুমি চাকরি পেয়ে যাবা চেষ্টা করো, বসে থাকলে হবে না, বলে লোকটি ৫০০ টাকার একটি নোট দিয়ে চলে গেলো।
পতিক সেখান থেকে উঠে আবার কাজ খুজতে থাকে।
এবার এক।
এক দোকানিকে বলে,
ভাই একটা কাজ দিবেন আপনার দোকানে, খুব উপকার হতো,
তুই কে?তোর পরিচয়? কোথায় থাকিস?
এই শহরে আমার কেউ নাই, বড় হইছি এতিম খানা আচ্ছা শুন “তুই রান্নাঘরে কাজ করতে পাড়বি, খাওয়া দিবো, বেতন নাই।”
রাতে সেই দোকানি তার গায়ে হাত দেয়। মদ খেয়ে এসে মাইর দেয় পতিক কে, পতিক চুপচাপ থাকে, এখানে মাইর দিলে ও খাবার পায়, কিন্তু মাইর শুধু বারতে থাকে, কিন্তু আর সহ্য করতে পাড়েনা, তাই একদিন রাতে পালিয়ে আসে, গা ধুয়েও মন থেকে ঘৃণা দূর করতে পারে না,
সে বুঝে যায়, পৃথিবী ভালোবাসে পরিচয়কে। ভালোবাসে তাদের, যাদের ঘর আছে, ঠিকানা আছে, বাবা-মা আছে। আর পতিক? সে তো কিছুই না।
একবার ট্রেন স্টেশনের পাশে বসে কাঁদছিল পতিক। তখন এক ভিক্ষুক এসে জিজ্ঞেস করেছিল, “তুই কাঁদস ক্যারে রে ভাই?”
পতিক বলেছিল, “পেটে ক্ষুধা। তিনদিন কিছু খাইনি।”
ভিক্ষুক নিজের পুরনো ব্যাগ থেকে আধা খাওয়া রুটি বের করে দিয়েছিল। পতিক খেতে খেতে জিজ্ঞেস করেছিল, “তুই কেমন আছস?”
ভিক্ষুক বলেছিল, “ভালো না, কিন্তু বাঁচতেসি। কারণ মরারও সুযোগ নাই।”
এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বেদনা যাদের, তারা নিজেরাই কাউকে কিছু বলে না। পতিক তখন থেকেই আর কাঁদে না। শুধু একা বসে থাকে রাতভর, বাতাসে শোনে শব্দ—যেন নিজের নিঃশ্বাসও তার সঙ্গে কথা বলে না।
ক্ষুধা শুধু পেটের ভেতর খালি জায়গা না—ক্ষুধা এক ভয়ংকর নিঃসঙ্গতা, এক কেঁদে ওঠা বুকের অভিমান, এক থমকে থাকা জীবন যেখানে ভালোবাসার কোনো আলোর রেখা পড়ে না।
পতিক ভাবলো শহর ত্যাগ করে অন্য শহরে যাবে , তখন তার সঙ্গে শুধু কিছু পুরনো জামা, একজোড়া ছেঁড়া স্যান্ডেল আর চোখের কোণায় জমে থাকা অসীম হতাশা।
সে প্রথমে খোঁজে খাবার। পেটে তিনদিনের ক্ষুধা, চোখে ঘুম নেই। হঠাৎ একদিন দুপুরবেলা কুড়িয়ে পায় একটা আধা খাওয়া কলা।
একটা রিকশাওয়ালা বলে, “এই শুয়োর, এটা ফেল! পচা খাইস না!”
পতিক থেমে যায়। কিন্তু তার ভেতরে কেউ বলে, “তুই মরবি কেন? তুই তো খেতে পারিস।”
সে কলাটা খায়। গায়ে ঘাম, চোখে জল। এটা বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত—লজ্জা ভুলে খাওয়া।
পরের দিন সে এক হোটেলের পিছনের গলিতে গিয়ে দাঁড়ায়। একটা বয় এসে বলে, “তুই কোথায় থাকস?” “কোথাও না।” “বস, মালিকরে বলি। কিন্তু বল, তুই বল তোর পরিচয় কী? আমি এতিম, সেখানে ভাগ্য ক্রমে কাজ পেয়ে যায়”
তাকে কাজ দেওয়া হয় থালা ধোয়ার। একেকটা থালা যেন তার বুকের ভার টেনে নিচ্ছে। খাওয়া দেয় দিনে একবার—বেশিরভাগ দিন সেটা ভাঙা রুটি আর পঁচা ডাল। তবুও সে বাঁচে, কারণ সে মরতে ভয় পায় না—সে শুধু একা মরতে চায় না।
একদিন হোটেলের বুড়ো রাঁধুনি বলে, “তুই তো হাসস না কনোদিন।” পতিক জবাব দেয় না। কী বলবে? যে কখনো ভালোবাসা পায়নি, সে কী নিয়ে হাসবে?
রাতে একদিন ভাবে পতিক, এই শহরে এমন কোন মানুষ নাই যে আমাকে ভালো বাসবে।
“আমার ক্ষুধা শুধু ভাতের না। আমি একটা কথা শুনতে চাই—’তুই বেঁচে থাক, আমি আছি পাশে’। কিন্তু কেউ তো বলে না।”
সে রাতেই হোটেলের মালিক তাকে জুতা দিয়ে পেটায়। কারণ সে নাকি এক বোতল তেল চুরি করেছে।
পতিক চিৎকার করে না, শুধু চুপ করে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। তার চোখের ভেতর তখন শুধু প্রশ্ন: “তুই কি মানুষ, পতিক? নাকি পৃথিবীর ভুল কোনো লেখা, যা সবাই কেটে দিতে চায়?”
সেই রাতেই সে আবার রাস্তায় ফিরে আসে। পেট খালি, পিঠে দাগ, চোখে অশ্রু শুকিয়ে কাঠ। সে হাঁটে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। রাত বাড়ে, বাতাস ভারি হয়। তার সামনে পড়ে থাকা একটা ভিক্ষুকের লাশ দেখে থমকে দাঁড়ায়।
ভিক্ষুকের পাশে কেউ নেই। কুকুর এসে লাশের গা শুঁকছে। পতিক পেছনে তাকিয়ে দেখে—একটা ফুল ফোটার শব্দও নেই এই মৃত্যুতে।
সে ভাবে—এই মৃত্যু একদিন তারও হবে। কেউ জানবে না, কেউ শুনবে না। কুকুর হবে একমাত্র সাথি।
পতিক সেদিন প্রথম অভিশাপ দেয়—এই পৃথিবীকে।
“যে পৃথিবী ভালোবাসতে জানে না, সে যেন একদিন ভালোবাসার জন্য কাঁদে। আর আমি, পতিক, যে মরেও অস্তিত্ব রাখিনি, সে যেন বাতাস হয়ে তোমার নিঃশ্বাসে ঢুকে, আর বের না হয়।”
সে এবার ভাবে নতুন শহরে যাবে এ শহরে যাবে এ শহর ও তার জন্য,
প্রথম দিনেই সে বুঝে গেল—এখানে কেউ ভালোবাসে না কাউকে বিনা কারণে। সে এক দোকানে গিয়ে বললো, “কাজ দেবেন?”
দোকানি তাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে হেসে বললো, “তোর মতো কুচকুচে, হাড্ডিসার ছেলেরে কে কাজে রাখে?”
পতিক মাথা নিচু করে বেরিয়ে এলো। দিনের শেষে পেট চুঁইয়ে ক্ষুধা যেন ঘুষি মারছিল পেটে। সে এক হোটেলের পেছনে গন্ধ পেয়ে ঢুকে পড়ে। ডাস্টবিনের পাশ থেকে এক টুকরো বাসি রুটি কুড়িয়ে নেয়। ঠান্ডা, শক্ত, কিন্তু তখন মনে হচ্ছিল স্বর্গীয় খাবার। খেতে খেতে চোখে জল চলে আসে। তখন পেটের ক্ষুধা নয়, ভালোবাসার ক্ষুধা বেশি কাঁদাচ্ছিল তাকে।
রাস্তার পাশে ঘুমিয়ে যায়, হঠাৎ স্বপ্নে পতিকের ছবি ধরে কে যেন, কল্পনার জগত শুরু করলো।
মানুষ মরে গেলে—সে কোথায় থাকে?
না, কোনো গন্ধ থাকে না বাতাসে, যে গন্ধ বলে দেবে এখানে একদিন কেউ ছিল।
না, কোনো পদচিহ্ন থাকে না ধুলোর মাঝে, যে বলে দেবে, সে হেঁটেছিল এই পথে।
না, কোনো শব্দ থেকে যায়, যে কান্নার ধাক্কায় ভাসিয়ে নেবে কারো হৃদয়।
মানুষ চলে গেলে, পৃথিবীর বুক থেকে একটুখানি মাটি সরে—ততটুকুই তার স্মৃতি।
এই পৃথিবী কাউকে ধরে রাখে না।
এই পৃথিবী চোখের পানি শুকিয়ে ফেলে, দাগ রাখে না।
এই পৃথিবী শুধু নতুন মুখ চেনে, পুরাতনদের ভুলে যায়।
তাই পতিক আজ আর নেই।
সে ছিল কি না, কেউ জানে না।
সে মরেছে কি না, কেউ জানে না।
কারণ সে কখনো জীবিতও ছিল না এই সমাজে।
যে জন্মেই পরিচয় পায়নি,
যে বেঁচে থেকেও শোকের আলো জ্বালাতে পারেনি,
যার কান্না বাতাসে কোনো ঢেউ তোলে না—
তার মৃত্যু কিভাবে মানুষ মনে রাখবে?
পতিক তাই কোনো কবর পায়নি,
কোনো চোখে জল পায়নি,
শুধু একটা খাতার ভাঁজে রেখে গেছে নিজের অস্তিত্বহীনতা।
একটা নাম, যা কেউ রাখেনি।
একটা জীবন, যা কেউ চায়নি।
একটা মৃত্যু, যা কেউ দেখেনি।
পতিক চোখ………..
আরও পড়ুন, আয়েশ ইকবাল রাজিবের লেখা।